বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ১০ টাকা
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ী উপজেলার দীঘিরপাড়ের বানু খাতুনের (৬৫) কোনো সন্তান নেই। এক বছর আগে স্বামীকে হারিয়েছেন তিনি। ছোট্ট একটা বাড়িতে একা থাকেন। স্বামীর মৃত্যুর পর তার জীবন দারিদ্র্যের মধ্যে শুরু হয়। ক্রমবর্ধমান পণ্যের বাজারে গরুর মাংস কেনা তার পক্ষে প্রায় অসম্ভব। কিন্তু ঈদুল ফিতরের দিন বানু খাতুন ‘গরীব কসাইখানা’ থেকে ১০ টাকায় এক কেজি গরুর মাংস কিনে এত কম দামে গরুর মাংস কিনে খুবই খুশি।
রাবিয়া বেগম বলেছেন: খুব দামি, এখানে ১০ টাকায় গরুর মাংস কিনেছি। একজন ব্যক্তি কয়েক দিন ধরে 1 কেজি গরুর মাংস খেতে পারেন।
ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিক্রমপুর মানবসেবা ফাউন্ডেশন এই ব্যতিক্রম আয়োজন করেছে রাবিয়া বেগমের মতো নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য। 'গরিবের কসাইখানা'র বিশেষ ঈদ বাজারে এই সংগঠনটি ১০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি করে। শনিবার সকাল ১১টার দিকে টঙ্গীবাড়ীর কমলহাল্লা স্কুল ক্যাম্পাসে ৩৫০ পরিবার তার কাছ থেকে ১০ টাকায় ১ কেজি গরুর মাংস পায়। গত ঈদুল ফিতরেও এই কসাইখানা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া রমজান মাসে সংগঠনটি ১০ টাকার ইফতার বাজার করে থাকে।
উপজেলার হায়ালপাল গ্রামের আকলিমা বেগম (৩৫) জানান, গতকাল থেকে হাটে গরু জবাই করা হচ্ছে। দুই ছেলে মাদ্রাসায় পড়ছে। তারা একটি গরুকে জবাই হতে দেখে তার মাংস খাওয়ার দাবি জানায়। খুব দামি হওয়ায় কিনতে পারিনি। এখানে এক কেজি গরুর মাংস ১০ টাকায় কিনেছি। "
কমলহাল্লার রিকশাচালক সেন্টু বেপারী (৪৮) ১০ টাকায় মাংস কিনে খুশি। তিনি বলেন, রিকশা চালিয়ে সংসার চালান। তিনি দুই মেয়ের সাথে বিবাহিত। এখন বিবাহিত দম্পতি। গতকাল সারাদিন রিকশা চালিয়ে তিনি পেয়েছেন ৪৪০ টাকা। এই টাকা দিয়ে তিনি অর্ধেক চিনি কিনেছেন। কিন্তু টাকা না থাকায় তিনি মাংস কেনেননি। আজ সে গরিব কসাইখানায় এসেছে ১০ টাকায় গরুর মাংস কিনতে।
সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রিয়াদ হোসেন বলেন, ঈদের দিন ৩৫০০ পরিবারের আনন্দ দ্বিগুণ করতে পেরে আমরা আনন্দিত। এটি সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে মাসিক সাবস্ক্রিপশন এবং অনুদান দ্বারা চালিত হয়। তবে আমাদের আরও বড় পরিকল্পনা ছিল। আর্থিক সংকটের কারণে তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। আমরা ভবিষ্যতে আরও পরিবারকে সাহায্য করার জন্য আপনার সাথে কাজ করার জন্য উন্মুখ।
সংগঠনের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, বাজারে মাংসের দাম ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা। সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে এত দামে কেনা অসম্ভব। তাদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করি। দেখতে পাচ্ছেন স্বল্প আয়ের মানুষের তৃপ্তির হাসি। এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনে আরও উৎসাহ পাই।
কোন মন্তব্য নেই